Header Ads

Seo

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) কি এবং কিভাবে শিখবেন?

আজকের এই টপিকটি এসইও এর একটি বেসিক বিষয়। ব্লগিং শুরুর দিকে এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের লেখার উচিত ছিল কিন্তু আমরা ধারনা করেছিলাম বিষয়টি নিয়ে অন-লাইনে অনেকবার লিখা হয়েছে, সেই জন্য বেসিক ব্যাপারগুলি নিয়ে লেখিনি। সম্প্রতি SEO নিয়ে আমাদের ব্লগের কয়েকজন ভিজিটরের কৌতুহলী প্রশ্ন শুনে এই ধরনের সহজতর বেসিক বিষয়টি নিয়ে লিখতে বাধ্য হলাম।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) কি এবং কিভাবে শিখবেন?

Search Engine Optimization (SEO) কি?

Search Engine Optimization কথাটির ভীতরে দুটি অর্থবহুল অংশ রয়েছে। একটি হচ্ছে Search Engine এবং অন্যটি হচ্ছে Optimization. তারমানে দাড়াচ্ছে SEO হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন-কে অপটিমাইজেশন করার এক ধরনের প্রযুক্তিগত ওয়েব কৌশল। এটিকে অন্যভাবেও বলা যায়- বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন হতে কোন একটি ব্লগ/ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টের ভাল অবস্থানে অথবা প্রথম পাতায় নিয়ে আসার কৌশল বা প্রক্রিয়াকেই Search Engine Optimization বলা হয়। এটিকে সার্চ ইঞ্জিন হতে ভাল ফলাফল পাওয়ার এক ধরনের নিয়মতান্ত্রিক চালাকিও বলতে পারেন।

Search Engine কি?

সহজ ভাষায় বলা যায় সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে ইন্টারনেটে কীয়ার্ডের মাধ্যমে কোন কিছু খোঁজার এক ধরনের সফটওয়ার বা এপ্লিকেশন। যেখানে কোন কিছু লিখে সার্চ দিলেই চোখের পলকে যে কোন বিষয়ে হাজার হাজার তথ্য আপনার সামনে হাজির করবে। সম্প্রতি সময়ের সবচাইতে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে Google. এ ছাড়াও জনপ্রিয়তার তালিকায় রয়েছে Bing, Yahoo, Ask ও Yandex সার্চ ইঞ্জিন। এই সার্চ ইঞ্জিন কি এবং কিভাবে কাজ করে এ নিয়ে আমরা পূর্বে একটি বিস্তারিত পোষ্ট শেয়ার করেছি।

কেন SEO করা হয়?

একটি ব্লগ/ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টের ভাল অবস্থানে বা প্রথম পাতায় নিয়ে আসার জন্য এবং সার্চ ইঞ্জিন হতে ভাল র‌্যাংকিং পাওয়ার জন্য বা সার্চ ইঞ্জিন হতে ব্লগে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর পাওয়ার জন্য মূলত সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) করা হয়। একজন লোক যখন তার ওয়েবসাইটকে সঠিকভাবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ করবে তখন সার্চ ইঞ্জিন হতে তার ব্লগে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর বাড়তে থাকবে। কারণ Search Engine Optimization করার ফলে সার্চ ইঞ্জিন তার ব্লগের কনটেন্টের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা পাবে। কাজেই যে কোন ওয়েবসাইট-কে সফল করতে হলে বা ওয়েবসাইট হতে আয় করার জন্য প্রতিনিয়তই সঠিকভাবে তার ওয়েবসাইটটিকে Search Engine Optimization করতে হবে।

SEO কত প্রকার ও কি কি?

কাউকে যদি জিজ্ঞেস করেন SEO কত প্রকার, তাহলে যে কেউ On Page SEO ও Off Page SEO এর কথা বলবে। এসইও দুই প্রকারের কথাটি ঠিক আছে। তবে On Page ও Off Page নয়। SEO হচ্ছে মূলত দুই প্রকারের। যথাঃ ০১. অর্গানিক এসইও ০২. পেইড এসইও। অর্গানিক এসইও আবার দুই ধরনের। একটি হচ্ছে On Page SEO এবং অন্যটি হচ্ছে Off Page SEO.


অর্গানিক SEO এবং পেইড SEO কি?

অর্গানিক ‍এসইও বলতে বুঝায় সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের সকল নিয়ম যথাযথভাবে অনুসরণ করে সার্চ রেজাল্টের পাতায় অবস্থান নেয়ার যাবতীয় প্রক্রিয়া। অন্যদিকে পেইড SEO হচ্ছে গুগল কোম্পানির নিকট টাকার বিনিময়ে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় চলে আসা। আপনারা ভালভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যে, কোন একটি বিষয় সার্চ দেয়ার পর সার্চ রেজাল্টের সবার উপরের কিছু ওয়েবসাইট থাকে যেগুলিতে ছোট করে Ad লিখা থাকে। সেগুলিই Paid SEO এর মাধ্যমে সবার উপরে এসেছে। অন্যদিকে এগুলির নিচে সে সমস্ত ওয়েবসাইটগুলি থাকে সেগুলিই অর্গানিক এসইও অর্থাৎ কোন টাকা না দিয়ে গুগলের পাতায় অবস্থান নিয়েছে।

On Page SEO ও Off Page SEO কি?

On Page SEO হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট/ব্লগকে পরিপূর্ণভাবে সাজানোর যাবতীয় কার্যক্রম অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইটকে ভালভাবে তৈরি করার জন্য যা কিছুর প্রয়োজন হয় তার সবটুকুই হচ্ছে On Page SEO. আর Off Page SEO হচ্ছে আপনার ব্লগটির কনটেন্টের লিংক বিভিন্ন জনপ্রিয় সাইটে শেয়ার করা, ব্যাক লিংক তৈরী করা, বিভিন্ন ফোরামে জয়েন, ব্লগের প্রচারনাসহ ইত্যাদি উপায়ে জনপ্রিয় করে তোলা।

SEO এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাঃ

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলে শেষ করা যাবে না। এক কথায় বলতে গেলে এভাবে বলা যায় অন-লাইন ব্লগিং, মার্কেটিং, ব্যবসার প্রচার ও অনলাইনে কোন বিষয়ে সফলতা অর্জনের জন্য SEO করতেই হবে। এসইও না করে কোনভাবেই অনলাইনের কোন বিষয়ে সাফল্য অর্জন করতে পারবেন না। তার কারণ হচ্ছে- ইন্টারনেটে সবাই সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সকল বিষয় খোঁজে থাকেন। বিশেষকরে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার এত ব্যাপক, যার জন্য গুগল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন না করে কোনভাবে সফল হওয়ার উপায় নেই। অধীকন্তু সম্প্রতি সময়ের জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার Mozilla Firefox ও Google Chrome সহ আরেক অনেক জনপ্রিয় Browsers গুলির ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন Google হওয়ার করনে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের ব্যবহার আরও বেশী বেড়ে গেছে। কাজেই আপনার ব্লগ/ওয়েবসাইটটি সবার কাছে পরিচিত ও জনপ্রিয় করে তোলার জন্য সার্চ ইঞ্জিনের বিকল্প আর কিছু নেই।

কিভাবে SEO করবেন?

কিভাবে SEO করবেন কথাটি শুনে হয়ত ভাবছেন এখনি সবকিছু জেনে যাবেন। আসলে কিভাবে SEO করতে হয় সেটির সহজ বা সংক্ষিপ্ত কোন উপায় নেই। SEO হচ্ছে চলমান গতানুগতিক পরিবর্তনশীল বিশাল একটি প্রক্রিয়া। যার বেশীরভাগ বিষয়ই সবসময় আপডেট ও পরিবর্তন হতে থাকে। তবে আপনি যদি SEO সম্পর্কিত বেসিক বিষয়গুলি ভালভাবে জানেন ও বুঝেন তাহলে সময়ের সাথে সাথে যতই পরিবর্তন হক না কেন পরিবর্তনের সবকিছুই আপনি সহজে বুঝতে পারবেন। সেই জন্য আপনাকে SEO এর মূল বিষয়গুলি অবশ্যই কোন ভাল একজন অভীজ্ঞ লোক বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে শিখে নিতে হবে।

কোথা হতে SEO শিখবেন?

ভালভাবে SEO শিখার জন্য দুই ধরনের উপায় রয়েছে। একটি হচ্ছে কোন অভীজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে শিখে নেয়া এবং অন্যটি হচ্ছে অন-লাইন হতে ভালমানের বিভিন্ন ব্লগ/ওয়েবসাইট হতে শেখা। অন-লাইন হতে শেখার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রচুর পরিমানে ধৈর্য্য ধারন করতে হবে। অন্যদিকে কোন ভাল প্রতিষ্ঠান থেকে শেখার ক্ষেত্রে অল্প সময়ে শিখে নিতে পারবেন।
তবে একটা কথা মনে রাখবেন আপনি অন-লাইন বা যে কোন প্রতিষ্ঠান হতে শিখুন না কেন অবশ্যই সেটি ভালমানের প্রতিষ্ঠান বা ভালমানের অল-লাইন ব্লগ হতে হবে। সম্প্রতি সময়ে SEO শেখানোর মত অনেক প্রতিষ্ঠানই হাতের কাছে রয়েছে, কিন্তু এদের মধ্যে ভালমানের প্রতিষ্ঠান পাওয়া খুব দুরূহ একটা ব্যাপার। 
উদাহরণ স্বরূপ- আজ আমি একটি SEO সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানের YouTube চ্যানেলে ব্লগের Heading ট্যাগের সেটিংস সম্পর্কিত একটি টিউটরিয়াল দেখি। সেখানে একজন শিক্ষক তার ছাত্রদের H1, H2 ও H3 ট্যাগ সেটিংসটা ভূলভাবে শেখাচ্ছিলেন। বিষয়টি দেখে অবাক না হয়ে পারলাম না।
আরেকটি উদাহরণ- আমার ব্লগের একজন ভিজিটরের নিকট হতে "আইটি বাড়ী ডট কম" ব্লগটার প্রশংসা শুনে ব্লগটিতে ভিজিট করি। ভিজিট করার পর সেখানে অবশ্যই SEO সংক্রান্ত বেশ কিছু ভালমানের ভিডিও টিউটরিয়াল দেখতে পাই। অবশ্য টিউটরিয়ালগুলি যে কোন ব্যক্তিকে SEO এর বেসিক বিষয়গুলি শিখতে সাহায্য করবে। তবে এই ভিডিও গুলির মধ্যে থাকা অনেক বিষয়ই আপডেট হয়েগেছে। সে ক্ষেত্রে ভিডিও গুলি থেকে সবকিছু সঠিকভাবে শেখা সম্ভব নয়। অন্যদিকে "আইটি বাড়ী ডট কম" ব্লগটির ‍Source ফাইল হতে ব্লগটির Meta Key Word ট্যাগের ভূল ব্যবহার দেখে আবাক না হয়ে পারলাম না। তখন বাধ্য হয়ে ভূলটি সংশোধনের জন্য রেফারেন্সসহ একটি কমেন্ট করি, কিন্তু "আইটি বাড়ী ডট কম" এর এ্যাডমিন আব্দুল কাদের সাহেব আমার কমেন্টটি অনুমোদন করেননি। পরের দিন দেখতে পাই উনার ব্লগের সোর্স ফাইল দেখার উপায় বন্ধ করে দিয়েছেন। আমার কমেন্টটি অনুমোদন না করা এবং সোর্স ফাইল বন্ধ করে দেয়ার সঠিক কারণ আমার কাছে বোধগম্য হয়নি। 
এই উদাহরণ গুলির পিছনে আমার একটাই উদ্দেশ্যে আপনি যে প্রতিষ্ঠান বা অনলাইন হতে শিখুন না কেন সেটি যেন হয় ভালমানের প্রতিষ্ঠান বা ব্লগ। তাহলে আপনি সঠিকভাবে পরিপূর্ণ SEO শিখতে সক্ষম হবেন।

আপনি কি SEO শিখতে সক্ষম হবেন?

বেশীরভাগ লোকই এসইও বিষয়টাকে বেশ কঠিন ভেবে মনেকরে আমার দ্বারা এসইও শেখা সম্ভব হবে না। আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলব বিষয়টাকে এত কঠিন না ভেবে সহজভাবে নিলে আপনিও একজন এসইও এক্সপার্ট হতে পারবেন। বিশেষকরে পেইড এসইও এর কথা না ভেবে আপনি ঐ টাকাগুলি দিয়ে ভালভাবে এসইও শিখে নিলে আপনার ব্লগটাকে ভবিষ্যতে একটি ভালমানের প্লাটফর্মে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন।

কিভাবে একটি ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করবেন?

প্রত্যেক ব্লগের এ্যাডমিন তার নিজের প্রিয় ব্লগটিকে সবার কাছে একটি জনপ্রিয় ব্লগ হিসেবে উপস্থাপন করতে চান। সবাই আশা করেন তার ব্লগটি সকলের কাছে জনপ্রিয় ব্লগ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। তবে একজন ওয়েব ডেভেলপারের/ব্লগারের পক্ষে এই কাজটি করা খুব কঠিন একটা বিষয়। একজন ব্লগার সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এবং আরো অন্যান্য কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে যদিও একটি ব্লগে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পেতে সক্ষম হন কিন্তু খুব কম সংখ্যক লোক ব্লগের জনপ্রিয়তা তৈরিতে সফল হতে পারেন। কারন ব্লগে ট্রাফিক/ভিজিটর পেলেই একটি ব্লগ জনপ্রিয় হয়ে উঠে না। একটি ব্লগকে সবার কাছে জনপ্রিয় এবং গ্রহনযোগ্য করে তুলার জন্য ব্লগ এ্যাডমিন ও ব্লগের বিভিন্ন বিষয়ে কিছু অসাধারন গুনাবলীর প্রয়োজন হয়।
কিভাবে একটি ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করবেন?
আপনি হয়ত ভাবতে পারেন কারো ব্লগে পর্যাপ্ত ট্রাফিক থাকলেই ব্লগটি সবচাইতে জনপ্রিয় ব্লগ হয়ে উঠবে। আসলে Traffic এবং জনপ্রিয়তা শব্দ দুটির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। সাধারনত আপনি লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন যে, অন-লাইনে অনেক ব্লগ রয়েছে যারা ইউটিব থেকে কিছু জনপ্রিয় ভিডিও বাছাই করে ভিডিওটির একটি আকর্ষণীয় এবং কৌতুহলী টাইটেল প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের Social Media-তে লিংক শেয়ার করার মাধ্যমে প্রচুর পরিমানে ভিজিটর পেয়ে যান। এ ধরনের ব্লগের পর্যাপ্ত ট্রাফিক থাকার কারনে র‌্যাংকিংও ভাল অবস্থানে থাকে। তবে খুব কম সংখ্যক ভিজিটর পরবর্তীতে পুনরায় এই টাইপের ব্লগে ভিজিট করেন। ঠিক একইভাবে আরও অন্যান্য টপিকের ব্লগ রয়েছে যারা বিভিন্ন কৌশল খাঠিয়ে ব্লগে পর্যাপ্ত ট্রাফিক পেয়ে যান, তবে ভিজিটরদের ব্লগে ধরে রাখতে বা ব্লগের জনপ্রিয়তা তৈরি করতে সক্ষম হন না।
একটি ব্লগে ট্রাফিক থাকার পাশাপাশি যখন ভিজিটরদের কাছে ব্লগের জনপ্রিয়তা এবং গ্রহনযোগ্যতা বৃদ্ধি পবে, তখনই আপনার ব্লগিং করার উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হয়েছে বলে ধরে নিতে পারেন। আপনাকে সব সময় একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, শুধুমাত্র ট্রাফিক বৃদ্ধি করার মাধ্যমে অন-লাইন হতে আয় করাটাই ব্লগিংয়ের মূখ্য উদ্দেশ্য নয়। আপনার ব্লগের কনটেন্টের মাধ্যমে কিছু নিত্য নতুন বিষয় শেয়ার করে সবাইকে শেখানোটা হবে আপনার মূল উদ্দেশ্য। পক্ষান্তরে যখন আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে, তখন ব্লগের ট্রাফিক এবং ব্লগ থেকে আয় করার বিষয়টা নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না। কারণ যে কোন জিনিসের সুনাম বা জনপ্রিয়তা ঐ বিষয়ের মাধ্যমে একজন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌছে দেবে। আমার ব্লগিং ক্যারিয়ারের দীর্ঘ অভীজ্ঞতা থেকে একটি ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সহায়ক কয়েকটি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

Attractive ব্লগ ডিজাইনঃ

সুন্দর্যের প্রতি সব মানুষের আকর্ষণ রয়েছে। মানুষ জন্মগতভাবে সুন্দরের পূজারী। ঠিক একইভাবে একটি আকর্ষণীয় ডিজাইনের ব্লগ যে কোন লোককে ব্লগের প্রতি আকর্ষণ করাতে পারে। একটি আকর্ষণীয় ইউনিক ডিজাইনের ব্লগ একটি ব্লগের ব্যক্তিত্বের প্রকাশ করে। কিন্তু বেশীরভাগ ব্লগারদের ক্ষেত্রে দেখা যায় অন-লাইনে বহুল ব্যবহৃত ফ্রি টেমপ্লেটগুলি ডাউনলোড করে ব্যবহার করছেন। বিষয়টি আপনি ভালভাবে চিন্তা করলে বুঝতে পারবেন যে, অন-লাইনে ১০০ জনের ব্যবহৃত ব্লগার টেমপ্লেটটি দিয়ে কিভাবে পাঠকদের ব্লগের ডিজাইনের প্রতি আকৃষ্ট করতে সমর্থ হবেন? এ ক্ষেত্রে ১০০ জনের ব্যবহৃত টেমপ্লেট দিয়ে ব্লগের Interface এর প্রতি কোনভাবেই পাঠকদের আকর্ষণ করাতে পারবেন না। বরংচ অধিক ব্যবহৃত একই ডিজাইনের ব্লগের কারনে পাঠকের কাছে আপনার ব্লগের গ্রহযোগ্যতা কমে যাবে।

আপনি যদি ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে দক্ষতা সম্পন্ন হন, তাহলে ব্লগিং শুরু করার পূর্বে ব্লগের ডিফল্ট টেমপ্লেটগুলির যে কোন একটিকে Customize করে সবার থেকে একটু ভিন্নরূপে তৈরি করতে পারেন। তবে আপনি যদি ওয়েব ডিজাইন করা না জানেন, তাহলে কোন ভালমানের ডেভেলপারের কাছ থেকে অর্ডার করে কিছু টাকার বিনিময়ে শুধুমাত্র আপনার জন্য একটি টেমপ্লেট ডিজাইন করিয়ে নিতে পারেন। তাহলে সবার থেকে আলাদা এ ধরনের ইউনিক ডিজাইনের ব্লগের প্রতি পাঠকরা অধিক আকৃষ্ট হবে। টেমপ্লেট ডিজাইনের ক্ষেত্রে Responsive ব্যাপারটি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। কারন পাঠকরা শুধুমাত্র আপনার ব্লগটি কম্পিউটার থেকে ভিজিট করবে না। সম্প্রতি মোবাইল, স্মার্ট ফোন এবং ট্যাবলেটের ব্যবহার এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, পাঠকরা তাদের প্রয়োজন এখন কম্পিউটার ব্যবহার না করে এ ধরনের স্মার্ট ডিভাইসের মাধ্যমে সেরে নিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে আপনার ব্লগটিকে Responsive ডিজাইন করলে অধিক পাঠক এবং জনপ্রিয়তা দুটিই পেতে পারেন। তাছাড়া সম্প্রতি গুগলও মোবাইল ফ্রেন্ডলি ব্লগগুলিকে র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে।

ভালমানের সাজানো কনটেন্টঃ

সর্বক্ষেত্রেই কনটেন্ট হচ্ছে একটি ব্লগের প্রাণ। আপনি যে বিষয় নিয়েই ব্লগিং করেন না কেন, ব্লগে অবশ্যই সবার থেকে আলাদা এবং ভালমানের কনটেন্ট থাকতে হবে। ব্লগিংয়ের ক্ষেত্রে আমি সবসময় সবাইকে এই বিষয়টির প্রতি অধিক গুরুত্ব দিতে বলি। কোন একটি পোষ্ট লিখার সময় আপনি ঐ লিখাটি সাবার কাছে সুন্দর, সহজ এবং বোধগম্য করে উপস্থাপন করতে পারলে, তখন আপনার লিখাটির প্রতি সবাই আকৃষ্ট হবে। এ ক্ষেত্রে আপনি যে কোন বিষয়ে যুক্তি ও উদাহরনের মাধ্যমে পাঠককে পরিষ্কার ধারনা দিতে পারেন। কারণ পাঠকরা আপানারমত সব বিষয়ে অভীজ্ঞতা সম্পন্ন হবে না। সে ক্ষেত্রে সহজভাবে কোন বিষয় উপস্থাপন করতে পারলে আপনি একজন ভালমানের লেখক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, লিখার মধ্যে অবশ্যই ভালমানের পরিপাঠি করা সুন্দর ও স্মার্ট শব্দ থাকলে বিষয়টি আরো ভাল হয়।

ধরুন-আপনার সামনে দু’জন লোক শার্ট, প্যান্ট এবং পায়ে সু পরে ইন করা অবস্থায় দাড়িয়ে আছে। তাদের একজনের শার্ট, প্যান্ট সুন্দরভাবে ইস্ত্রি করা, পায়ের সু ঠিকমত কালি করার পাশাপাশি লোকটির চুল ও দাড়ী কাঠা অবস্থায় সুন্দরভাবে পরিপাঠি করা রয়েছে। পক্ষান্তরে অন্য লোকটির শার্ট, প্যান্ট, সু, চুল ও দাড়ি কোন কিছু সুন্দরভাবে গুছানো নেই। এ ক্ষেত্রে প্রথম লোকটি যেমনি স্মার্ট, সুন্দর এবং একজন ব্যক্তিত্বের অধিকারী লাগবে, উল্টো দিকে দ্বিতীয় লোকটির সবকিছু থাকার পরও জিনিসগুলি পরিপাঠি করা না থাকার কারনে অসুন্দর দেখাবে। ঠিক একইভাবে আপনার ব্লগের কনটেন্টগুলি যদি সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিপাঠি করে লিখতে পারেন, তাহলে আপনার লেখার কোয়ালিটির পাশাপাশি ব্যক্তিত্বের একটি ছুয়া পাওয়া যাবে। এ বিষয়টি একজন পাঠককে আপনার ব্লগের কনটেন্টের প্রতি অধিক আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবে।

অন্যান্য ব্লগে Gust ব্লগার হওয়াঃ

এটি গুগল ব্লগারের বড় একটা অপশন। এই অপশনের মাধ্যমে সহজে যে কোন ব্যক্তিকে ব্লগের Author হিসেবে যুক্ত করার মাধ্যমে লিখার সুযোগ প্রদান করা যায়। অন-লাইনে অনেক ব্লগ রয়েছে যারা নিয়মিতভাবে বিভিন্ন বিষয়ে Gust ব্লগার নিয়ে থাকে। আপনি যে বিষয়টি নিয়ে ব্লগিং করছেন সেই বিষয়ে ভালমানের ব্লগ গুলিতে একজন Gust ব্লগার হিসেবে যোগ দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আপনি যদি ভালমানের লেখক হন, তাহলে খুব সহজে ঐ ব্লগের মাধ্যমে আপনার ব্লগটিকে পরিচয় করিয়ে ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে পারেন। আপনি যখন Gust ব্লগার হিসেবে ঐ ব্লগটিতে নিয়মিত লিখবেন, তখন তারা আপনার ব্লগের পোষ্টগুলি লিংক করার সুযোগ দেবে। এ ক্ষেত্রে আপনি নিঃসন্দেহে একটি ভালমানের ব্লগ থেকে Dofollow Backlinks তৈরির মাধ্যমে ঐ ব্লগ থেকে আপনার ব্লগটিতে ট্রাফিক বৃদ্ধি করে নিতে পারেন।

কমেন্টের সঠিক প্রতি উত্তর দেয়াঃ

এ বিষয়টি আপনার ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। পাঠক যখন আপনার পোষ্ট পড়বে তখন পোষ্টের কিছু বিষয় হয়ত ঠিকমত বুঝবে না। এ ক্ষেত্রে তারা চাইবে কমেন্টের মাধ্যমে আপনার নিকট থেকে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জেনে নিতে। আপনি যদি কমেন্টের প্রতি-উত্তর প্রদানের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে কমেন্টকারীকে সহজ ও বোধগম্য করে সন্তুষজনক জবাব দিতে পারেন, তাহলে ঐ পাঠক নিঃসন্দেহে আপনার ব্লগটিকে তার প্রিয় ব্লগের তালিকা রেখে Bookmark করে নেবে। এ ছাড়াও কিছু লোক যারা আপনার ব্লগের Contact Form এর মাধ্যমে কিংবা ই-মেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে সমাধান চাইবে। আপনি বিষয়টি হেলায় ফেলে না দিয়ে, আপনার ব্লগের বিষয়ের সাথে মিল রয়েছে এমন বিষয়গুলি সম্পর্কে যোগাযোগকারীকে সমাধান সম্পর্কে জানাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ঐ লোকটি আপনার এবং আপনার ব্লগের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে ব্লগটিকে প্রিয় তালিকার মধ্যে রেখে দিতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে পাঠকরা কিছুতেই তাদের সীমা অতিক্রম করা উচিত হবে। পাঠকদের উদ্দেশ্যে এ বিষয় আমি দুটি কথা বলে নিচ্ছি।

অনেক ভিজিটর রয়েছেন যারা বিভিন্ন বিষয়ে Facebook, WhatsApp এবং মোবাইলে ফোন করে ব্লগের Author এর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য চান। আসলে এ বিষয়টি মোটেও সমিচীন নয়। কারণ ব্লগের Author এরও একটা Personality এবং ব্যস্ততা রয়েছে। এমন নয় সে সবসময় ব্লগ নিয়ে বসে থাকে। এ ক্ষেত্রে আপনার যদি কোন বিষয়ে সমাধান একান্ত প্রয়োজন হয়, তাহলে কমেন্ট, ই-মেইল এবং ফেইসবুক কমিউনিটিতে যোগাযোগ করে আপনার বিষয় সম্পর্কে সাহায্য চাইতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ঐ ব্লগের Author এর পাশাপাশি হয়ত অন্য লোকের কাছ থেকেও আপনার কাঙ্খিত বিষয়ে সহজে অল্প সময়ে সমাধান পেয়ে যাবেন।

ব্লগের Communities তৈরি করাঃ

এই বিষয়টি আপনার ব্লগকে সবার কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে। আপনি যে বিষয় নিয়ে ব্লগিং করছেন, সেই বিষয়ের ভালমানের অন্যান্য ব্লগগুলির সাথে আপনার ব্লগটির Communities তৈরি করে নিতে পারেন। আপনি অন-লাইনে খোঁজলে খুব সহজে এ ধরনের অনেক ব্লগ পেয়ে যাবেন। তাছাড়া কিছু ভালমানের ব্লগ রয়েছে যেগুলি আপনি সাব্সক্রাইব করে নিয়ে তাদের সাথে নিয়মতভাবে একটি Communication তৈরি করে নিতে পারেন। আপনার ব্লগেও Subscribe অপশনটা ব্যবহার করে অন্যদের-কে আপনার ব্লগটি Subscribe করার সুযোগ করে দিতে পারেন।

কিছু ফ্রি অপশন প্রদান করাঃ

আপনি একটা জিনিস মনে রাখবেন, পাঠকরা সবসময় ফ্রি জিনিস সহজে পেতে পছন্দ করে। তারা সব সময় চাইবে কারো ব্লগ থেকে ফ্রিতে ভালমানের কিছু ডাউনলোড করে নিতে। ধরুন আপনার ব্লগে Blogger Template, WordPress Theme এবং আপনার নিজের লিখা বিভিন্ন ই-বুক টাকার বিনিময়ে শেয়ার করেন। এ ক্ষেত্রে আপনি যদি সবগুলি টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেন, তাহলে পাঠকরা আপনার ব্লগটি ভিজিট করা থেকে বিরত থাকবে। কারণ তাদের মনে একটা ধারনা হয়ে যাবে, এই ব্লগে টাকা ছাড়া কিছুই নেয়া যায় না। সেই জন্য আপনার উচিত হবে মাঝে মধ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলি বিনা মূল্যে সবাইকে ডাউনলোড করার সুযোগ তৈরি করে দেয়া। এ বিষয়টি আপনার ব্লগকে পাঠকের কাছে জনপ্রিয় এবং গরুত্বপূর্ণ করে তুলবে।

Social Media Promote করাঃ

বর্তমান সময়ে ওয়েব ডেভেলপাররা ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রেও সোসিয়াল মিডিয়াকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। কারন বিভিন্ন সোসিয়াল মিডিয়া ব্যবহারকারীর সংখ্যা এত বেশী যে, এটি কোন ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের পন্যের প্রচার-প্রসার এবং জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে অনেক ভূমিকা পালন করে। বিশেষকরে Facebook এবং Twitter এ আপনার ব্লগের জন্য একটি করে Fan Page তৈরি করে Fan বৃদ্ধি করে নিয়মিতভাবে ব্লগের বিভিন্ন পোষ্ট শেয়ার করার মাধ্যমে ব্লগের জনপ্রিয়তা এবং ট্রাফিক দুটিই বৃদ্ধি করতে পারবেন। তাছাড়াও Facebook এ একটি Group তৈরি করে সেখানে মেম্বার বৃদ্ধির মাধ্যমেও আলোচনা-সমালোচনা করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান প্রদানের মাধ্যমে ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে পারেন।

সর্বশেষঃ উপরের সবগুলি বিষয় আপনার ব্লগের ট্রাফিক বৃদ্ধি, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এবং জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে বিশেষভাবে অবদান রাখবে। আপনি যদি ব্লগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করে ব্লগের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে পারেন, তাহলে আপনার ব্লগটি এক সময় সবার কাছে ব্রান্ড হয়ে যাবে। তখন ব্লগের ট্রাফিক এবং ব্লগ থেকে আয় করা কোনটি নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। কারণ যখন আপনার ব্লগটি সবার কাছে পরিচিত হয়ে যাবে, তখন পাঠক ব্লগটিতে সরাসরি ব্লগের লিংক ব্যবহার করে নিয়মিতভাবে ভিজিট করতে থাকবে। এ জন্য সবাইকে ব্লগের SEO করার পাশাপাশি জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কৌশলগুলি যথাযথভাবে অনুসরণ করা প্রয়োজন।

সার্চ রেজাল্টের ১ম পেজে আসার জন্য On Page SEO Techniques

যখন কোন ব্লগ/ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করতে হয় তখন দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনুসরণ করার প্রয়োজন পড়ে। একটি হচ্ছে অন-পেজ অপটিমাইজেশন এবং অপরটি হচ্ছে অফ-পেজ অপটিমাইজেশন। আজ আমরা অন-পেজ অপটিমাইজেশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার পাশাপাশি অন-পেজ অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় অবস্থান নেয়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ Techniques শেয়ার করব।
সার্চ রেজাল্টের ১ম পেজে আসার জন্য On Page SEO Techniques
আমরা সবাই নিশ্চয় জানি যে, On Page Optimization হচ্ছে ব্লগের অভ্যন্তরিন সকল বিষয়গুলি যথাযথভাবে সার্চ ইঞ্জিনের উপযোগী করে নেয়া। ব্লগের টাইটেল ট্যাগ, ম্যাটা ট্যাগ, কীওয়ার্ড, ভালমানের কনটেন্ট ইত্যাদি শেয়ার করার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনে অবস্থান নেয়ার একটি প্রক্রিয়া। যখন এ কাজগুলি সঠিকভাবে করতে পারবেন তখন আপনার ব্লগের/ওয়েবসাইটের On Page Optimization পরিপূর্ণ হয়েছে বলে মনে করতে পারবেন।

কেন On Page Optimization করবেন?

আমি আগেও বলেছি On Page Optimization হচ্ছে ব্লগের অভ্যন্তরিন টাইটেল ট্যাগ, ম্যাটা ট্যাগ, কীওয়ার্ড, ভালমানের কনটেন্ট ইত্যাদি সঠিকভাবে সেট করে নেয়ার একটি প্রক্রিয়া। মূলত সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে এক ধরনের সফটওয়ার। এটি মানুষের মত ব্রেইন খাঠিয়ে কিছু বুঝতে পারে না। তাকে কমান্ড দেয়ার মাধ্যমে যা বুঝানো হয়, সে তাই বুঝে। এ ক্ষেত্রে তাকে যদি তার সঠিক নিয়মানুসারে কমান্ড দিতে না পারেন, তাহলে সে আপনার ব্লগ/ওয়েবসাইটটিকে না বুঝার কারনে Ignore করবে। সেই জন্য সার্চ ইঞ্জিনকে আপনার ব্লগের সকল বিষয়গুলির গুরুত্ব যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেয়ার সঠিক নিয়মে On Page Optimization করতে হবে। আপনি যদি ব্লগের সকল On Page Optimization বিষয়গুলি যথাযথভাবে করতে পারেন, কেবল তবেই আপনার ব্লগের পোষ্টগুলি সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় পাওয়ার আশা করতে পারেন। নিচে আমরা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ On Page Optimization এর বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

১. ভালমানের কনটেন্টঃ

একটি ব্লগের Brilliant Content সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) ছাড়াই সার্চ রেজাল্টের শীর্ষে অবস্থান নিতে সক্ষম। আর ভালমানের কনটেন্টের পাশাপাশি যদি কেউ Proper SEO করতে পারেন, তাহলেত ব্লগের ট্রাফিক নিয়ে আর কোন চিন্তাই থাকে না। এ জন্য সার্চ ইঞ্জিনের ভাষায় একটা প্রবাদ আছে ''A Brilliant Content is King for all SEO". আপনি যদি সবসময় ব্লগে ভালমানের এমন কোন Unique Content শেয়ার করতে পারেন, যেটি নিয়ে ইন্টারনেটে এ যাবত লেখা হয়নি বা খুব কম শেয়ার করা হয়েছে, তাহলে এই বিষয়ে SEO না করলেও আপনার বিষয়টি সার্চ রেজাল্টের শীর্ষে থাকবে। তবে যেহেতু এটা আদৌ সম্ভব নয়, সেহেতু আপনাকে চেষ্টা করতে হবে সবার চাইতে ভালমানের কনটেন্ট পাবলিশ করার পাশাপাশি যথা নিয়মে SEO অনুসরণ করা।

২. ব্লগের পোষ্ট টাইটেলঃ

সার্চ ইঞ্জিন হতে একটি ব্লগে যত ভিজিটর আসে তার প্রায় ৮০% নির্ভর করে Post Title এর উপর। কারণ Title হচ্ছে পোষ্টের বিষয় বস্তুর সারসংক্ষেপ। কনটেন্ট নিংসন্দেহে SEO এর রাজা কিন্তু টাইটেলকে অনুসরণ করেই পোষ্টের কনটেন্ট হয়ে থাকে। একজন লেখক যদি পোষ্টের বিষয় বস্তুর সাথে মিল রেখে আকর্ষণীয় পোষ্ট টাইটেল লিখতে পারেন, তাহলে আমি মনেকরি ব্লগ পোষ্টের অভ্যন্তরিন বাকী SEO গুলি খুবই সহজে মেনটেইন করতে পারবেন। একটি সুন্দর ও অপটিমাইজ করা ব্লগ পোষ্ট টাইটেল যে কোন সার্চ ইঞ্জিন রোবটের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম। আপনি কিভাবে সার্চ ইঞ্জিন Friendly ব্লগ Post Title লিখবেন এ নিয়ে ইতিপূর্বে বিস্তারিত পোষ্ট শেয়ার করেছি।

৩. পোষ্টের Meta Description:

বর্তমানে যত ধরনের Meta Tag রয়েছে তাদের মধ্যে Meta Description টা হচ্ছে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্লগের পোষ্ট টাইটেলের পরেই সার্চ ইঞ্জিন Meta Description কে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কেউ যখন সার্চ ইঞ্জিনে কোন বিষয়ে খোঁজে, তখন সার্চ ইঞ্জিন প্রথমে Post এর টাইটেল দেখার পাশাপাশি Meta Description দেখে থাকে। এ ক্ষেত্রে সার্চকারীর ঐ কীওয়ার্ডটি যদি টাইটেল কিংবা Meta Description এর মধ্যে পাওয়া যায়, তাহলে খুব সহজে আপনার ব্লগের পোষ্টগুলি সার্চ রেজাল্টের প্রথম পাতায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে পোষ্টের Meta Description টা অবশ্যই আপনার পোষ্টের বিষয়বস্তুর সাথে মিল রেখে গুরুত্বপূর্ণ কীওয়ার্ডের সমন্বয়ে হতে হবে। আমি অনেক ভালমানের ব্লগ দেখেছি যারা ব্লগের Meta Description ট্যাগটাকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে পোষ্টের টাইটেলটি কপি করে Meta Description হিসেবে সেট করে রেখেছেন। এ ক্ষেত্রে আপনার ঐ Meta Description টি সার্চ ইঞ্জিনের কাছে কোন গুরুত্ব বহন করতে পারে না।

৪. পোষ্টের Permalink Structure:

একটি পোষ্টের সুগঠিত Url দেখতে যেমন সুন্দর মনে হবে, তেমনি সার্চ ইঞ্জিনের কাছে অনেক গুরুত্ব বহন করতে পারবে। আপনি যে বিষয় নিয়ে পোষ্ট করছেন সে বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পোষ্টের Permalink গঠন করতে হবে। কারন পোষ্টের Permalink টি যদি পোষ্টের গুরুত্বপূর্ণ কীওয়ার্ডের সাথে মিল রেখে করেন, তাহলে সার্চ ক্যোয়ারী থেকে সার্চ রেজাল্টের ভাল অবস্থানে আসার অধীক সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যায়। অনেকে এ বিষয়টিকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে কোন রকম একটি Url লিখে থাকেন। উদাহরণ স্বরূপ-আপনি এন্ড্রয়েড নিয়ে একটি পোষ্ট করছেন। আপনার পোষ্টের Url টি যদি www.prozokti.com/2015/05/post7.html দিয়ে রাখেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন পোষ্টের Url থেকে পোষ্টের বিষয় সম্পর্কে কিছুই বুঝতে পারবে না। অপর দিকে Url টির গঠন যদি www.prozokti.com/2015/05/poweramp-android-apk.html হয়, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন সহজে বুঝতে পারবে পোষ্টটি Poweramp Android Apk নিয়ে লিখা।

৫. পোষ্টের Heading Tags:

সাধারণত ব্লগের বিভন্ন গুরুত্বপূর্ণ Heading Tags গুলি H1, H2, H3 এবং H4 আকারে লিখা হয়ে থাকে। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের ক্ষেত্রে এই ধরনের Heading Tags গুলি অনেক গুরুত্ব বহন করে থাকে। আপনি যখন কোন একটি পোষ্ট লিখবেন, তখন পোষ্টের মধ্যে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ Heading Tag টা থাকবে H1 আকারে। কারণ সার্চ ইঞ্জিনের কাছে যে কোন ব্লগের H1 ট্যাগটা অন্যান্য Heading Tag এর চাইতে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে। তারপর বাকী Headings গুলি H2, H3 এবং H4 হয়ে ক্রমান্বয়ে ব্যবহার হতে থাকবে। এ নিয়ে আমরা ইতিপূর্বে Multiple Posts Titles এবং Multiple Header Title Tag নামে দুটি পোষ্ট শেয়ার করেছি।

৬. Content Interlinking:

আপনি যখন কোন একটি বিষয়ে নুতন পোষ্ট লিখবেন তখন পোষ্টটির সাথে সম্পৃক্ত অন্য দু-একটি পোষ্ট Anchor Text হিসেবে বিভিন্ন কীওয়ার্ডের সাথে লিংক করে দিতে পারেন। এ বিষয়টি যদিও আপনাকে সরাসরি সার্চ ইঞ্জিন হতে ভিজিটর এনে দিতে সক্ষম হবে না কিন্তু সার্চ ইঞ্জিন বা অন্য কোথা হতে আগত ভিজিটরদের ব্লগের অন্য পোষ্টগুলিতে ভিজিট করানোর মাধ্যমে দীর্ঘ সময় অবস্থান করিয়ে Page View বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে। তাছাড়া এটি আপনার ব্লগের Internal Backlink বাড়ীয়ে নিবে। তবে নতুন পোষ্টটির সাথে মিল নেই এমন কোন পোষ্ট লিংক করা থেকে বিরত থাকবেন। যদি অযথা যে কোন কীওয়ার্ডের সাথে লিংক করেন, তাহলে সার্চ ইঞ্জিন বট আপনার লিংকগুলিকে Spam হিসেবে ধরে নিতে পারে। সেই জন্য যখন কোন Internal লিংক তৈরি করবেন, সেটি যেন নতুন পোষ্ট এবং কীওয়ার্ডের সাথে মিল থাকে।

৭. অন্য ব্লগের সাথে Linking করাঃ

আপনার ব্লগের বিষয়ের সাথে মিল রয়েছে এমন ভালমানের Nofollow ও Dofollow ব্লগের সাথে কমেন্টের মাধ্যমে অথবা বিভিন্ন ফোরামে জয়েন করার মাধ্যমে External Backlink তৈরি করে নিতে পারেন। এটি আপনার ব্লগে সার্চ ইঞ্জিন হতে সরাসরি ভিজিটর এনে না দিলেও ঐ ব্লগের মাধ্যমে আপনার ব্লগে কিছু ভিজিটর এনে দিতে সক্ষম হবে। এ বিষয়টি আপনার ব্লগের র‌্যাংকিং বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তাছাড়া আপনি যদি এভাবে বিভিন্ন ভালমানের Dofollow ব্লগের সাথে লিংক তৈরি করতে পারেন, তাহলে আপনার ব্লগের Backlinks বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আর আপনি নিশ্চয় জানেন যে, ব্লগের র‌্যাংকিং বৃদ্ধিতে Dofollow Backlinks গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

৮. পোষ্টের Image Optimization:

Image হচ্ছে ব্লগ পোষ্টের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ব্লগ পোষ্টে Image ব্যবহার করে যে কোন বিষয় সম্পর্কে পাঠকদের সুস্পষ্ট ধারনা দেয়া যায়। এমন কিছু পোষ্ট থাকে যে গুলিতে Image ব্যবহার না করলে পাঠকদের পরিষ্কার ধারনা দেয়া সম্ভবই হয় না। অন্যদিকে সার্চ ইঞ্জিনও আপনার ব্লগে সকল Image গুলিকে আলাদাভাবে সার্চ রেজাল্টে নিয়ে আসে। সাধারণত আপনি দেখে থাকেন যে, Google Search এর সার্চ রেজাল্টে Image নামে একটি ট্যাব থাকে। ওখানে ক্লিক করে কাঙ্খিত বিষয়ের অনেক Image পাওয়া যায়। আপনি যদি ব্লগের Image গুলি সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলী করে লিখেন তাহলে ঐ Image থেকে অনেক ভিজিটর পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়। ব্লগের Image এ বিভিন্ন ধররেন Alt Tag ও Caption এর মাধ্যমে Optimize করা যায়। কিভাবে পোষ্টের Image Optimize করতে হয় এ নিয়ে আমরা একটি বিস্তারিত পোষ্ট শেয়ার করেছি।

৯. Keyword Density বা ঘনত্বঃ

কীওয়ার্ড ডেনসিটি হল কত বার একটি ওয়ার্ড আপনার ব্লগের কোন একটি পোষ্টে আছে। মনে করু
ন আপনার একটি ওয়েবসাইটের কোন পেইজে ১০০ শব্দ আছে, আর সেই ১০০ শব্দের মধ্যে যদি ৫ বার কীওয়ার্ড পাওয়া যায়, তাহলে বলা যাবে ৫ টাইমস কীওয়ার্ড ব্যবহার হয়েছে এবং সেখানে কীওয়ার্ড ডেনসিটি হল ৫%। একটি  পেইজের কীওয়ার্ড ডেনসিটি কত হওয়া উচিত সেটা সঠিকভাবে বলা একটু কঠিন কাজ। তবে আমি মনে করি একটি ওয়েবসাইটের কীওয়ার্ড ডেনসিটি সাধারণত ৫-৭% এর মধ্যে থাকা উচিত। মনে রাখবেন কীওয়ার্ড ডেনসিটি খুব বেশি রাখা যেমন ভাল নয় তেমনি খুব কম রাখাও ভাল নয়।
সর্বশেষঃ আমরা On Page SEO এর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে সহজে ধারনা দেয়ার পূর্ণাঙ্গ চেষ্টা করেছি। উপরের সকল বিষয়গুলি যথাযথভাবে অনুসরণ করে ব্লগিং চালিয়ে গেলে যে কেউ অল্প দিনে সার্চ ইঞ্জিন হতে ব্লগে পর্যাপ্ত ভিজিটর পেয়ে সাফল্যের ধারপ্রান্তে পৌছতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। এ বিষয়ে যদি কারো কোন প্রকার প্রশ্ন থাকে কিংবা মনে কোন খটকা তৈরি হয়, তাহলে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। কারণ আমরা প্রশ্নের মাধ্যমে যে কোন সমাধান দিতে অধিক পছন্দ করি।

লেখা বা ছবি কপি করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ

1 comment:

Theme images by enot-poloskun. Powered by Blogger.